অপরিকল্পিত যানবাহন পার্কিংয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের মধ্যকার অংশটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। মহাসড়কটির দুই পাশে যানবাহন মেরামতের জন্য গড়ে ওঠেছে অসংখ্য মটর গ্যারেজ। সড়ক ঘেঁষে রাখা থাকে ছোট, বড় বিভিন্ন ধরনের গাড়ি।
সারা বছর অবাধে চলাচল করে ইঞ্জিনচালিত নিষিদ্ধ নসিমন, করিমন, আলমসাধু, অসংখ্য ইজিবাইক। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আগে এবং বর্তমান সময়ে অনেকবার আলোচনা করেছেন। আজও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। কালীগঞ্জ শহরের নিমতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে মোবারকগঞ্জ চিনিকল গেটের আগ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটারজুড়ে মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
ফলে ব্যস্ততম এ অংশটিতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। আবার সড়ক দখলের কারণে প্রতিনিয়ত যানজটে আটকে যাচ্ছে মালামাল বহনকারী ও যাত্রীবাহী বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। যা প্রতিকার তো হচ্ছেই না বরং মহাসড়কে জট ও দুর্ভোগ যেন পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১০ জেলাসহ সারা দেশের অসংখ্য যানবাহন কালীগঞ্জ শহরের মধ্যকার মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করছে।
শহরের নিমতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে মোবারকগঞ্জ চিনিকলের প্রধান ফটকের আগ পর্যন্ত অংশে যত্রতত্র গাড়ি রাখা রয়েছে। বিশেষ করে সড়কের দুই পাশের অধিকাংশ মটর গ্যারেজগুলোর সামনে, শহরের পুরাতন ব্রিজ সংলগ্ন সড়কের উত্তর পাশে, আয়েশা তেল পাম্পের পশ্চিম পাশে, বৈশাখী তেল পাম্পের পূর্বে মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে অনেক গাড়ি পার্কিং করা রয়েছে। এ ছাড়া নিমতলা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ঘোষ মার্কেটের সামনে কোনো মটর গ্যারেজ না থাকলেও রাখা রয়েছে অনেক গাড়ি।
এগুলোর মধ্যে অনেক গাড়ি রাখা হয় একবারেই মহাসড়ক ঘেঁষে। আর এ গাড়িগুলো যখন সড়কে ওঠানো হয় তখন সড়কের দুই পাশে তেমন নজরদারি থাকে না। ফলে দুইদিক থেকে আসা দ্রুতগামী যানবাহনের প্রায়ই ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, মহাসড়ক ঘেঁষা বৈশাখী তেলপাম্পের মোড় থেকে একটি সড়ক আমজাদ আলী মহিলা কলেজ ও ভূষণ হাইস্কুলের পাশ দিয়ে বাজারের মধ্যে গেছে। এতে সড়কটি সবসময় ব্যস্ত থাকে। কিন্তু বৈশাখী তেলপাম্পের মোড়টিতে মহাসড়কের কিছু অংশজুড়েই সারাবছর ট্রাক রেখে দেয়া হয়। ফলে মহাসড়কের সামনে থেকে যে কারণে সামনে থেকে গাড়ি আসছে কি না দেখা যায় না। ফলে স্থানটি ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্ঘটনার শঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানান।
কালীগঞ্জ (বারোবাজার) হাইওয়ে পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান জানান, আগে এগুলো দেখে ব্যবস্থা নেয়া হতো। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে বেশ কঠিন হয়ে গেছে। তবে মহাসড়কে চলাচলরত ইঞ্জিনচালিত অবৈধ যানবাহন বন্ধে কাজ চলমান। তারপরও অনেক সময়ে এগুলো চলাচল করে। সমস্যা চারদিকে এসব যানবাহনে কৃষকরা এখন তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে নিয়ে আসেন। ফলে এসব গাড়ি আটকে দিলে কৃষকদের ভোগান্তি হয়। তাই অনেক সময় মানবিক হতে হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম জানান, আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে সবসময় পরিচ্ছন্ন শহরের বিষয়ে কথা হয়। জনসাধারণের জন্য নিরাপদ সড়ক আবশ্যক। অনেক সময় নিজেদের অসচেতনতায় সড়ক অনিরাপদ হয়ে ওঠে।
সকলে গাড়ি পার্কিং করার সময় একটু দেখে পার্কিং করলে এ সমস্যার সৃষ্টি হয় না। যেকোনোভাবে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কালীগঞ্জ শহরের অংশ ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ করা হবে।
টিএইচ